Consumer Awareness Project
সিআরবি প্রোফাইল
Council of Consumer Rights Bangladesh(CRB)
ভোক্তা-অধিকার কী কী ?
জাতিসংঘ স্বীকৃত ভোক্তা অধিকার ৮টি, যথা
১) মৌলিক চাাহিদা পূরণের অধিকার (সংবিধানে বিধৃত); ২) নিরাপদ পণ্য বা সেবা পাওয়ার অধিকার, ৩) জানার অধিকার ৪) তথ্য পাওয়ার অধিকার (তথ্য অধিকার আইন. ২০০৯-এ বিধৃত), * ৫) পছন্দের অধিকার, ৬) অভিযোগ করা ও প্রতিকার পাওয়ার অধিকার ৭) ভোক্তা অধিকার ও দায়িত্ব সম্পর্কে শিক্ষা লাভের অধিকার, ৮) সুস্থ পরিবেশের অধিকার।
ভোক্তা কে ?
নিম্নোক্ত ব্যক্তিগণ ভোক্তা। বাণিজ্যিক উদ্দেশ্য ব্যতীত-যিনি
১) সম্পূর্ণ মূল্য পরিশোধ করে বা সম্পূর্ণ বাকিতে পণ্য অথবা সেবা ক্রয় করেন, ২) কিস্তিতে পণ্য অথবা সেবা ক্রয় করেন; ৩) আংশিক মূল্য পরিশোধ করে বা আংশিক বাকিতে পণ্য অথবা সেবা ক্রয় করেন, ৪) বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে পণ্য ক্রয় বিক্রয় করেন।
সিআরবি’র পূর্ণাঙ্গ অর্থ : কাউন্সিল অব কনজিউমার রাইটস বাংলাদেশ-সিআরবি ইংরেজীতে : Council of Consumer Rights Bangladesh(CRB)
 |
 |
 |
বিশ্ব-ভোক্তা অধিকার দিবসের র্যালী- ২০২২ |
বিশ্ব-ভোক্তা অধিকার দিবসের আলোচনা সভা |
নেটওয়ার্ক সংগঠন সমূহকে সনদপত্র বিতরণ |
সিআরবি’র পটভূমি :
জাতীয় স্বেচ্ছাসেবী ভোক্তা ও মানবাধিকার সংগঠন সেলফ এইড ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ডিজাইনার কে.জি.এম সবুজের সাংগঠনিক পরিকল্পনায় প্রতিষ্ঠিত হয় কাউন্সিল অব কনজিউমার রাইটস বাংলাদেশ-সিআরবি। সিআরবি একটি বেসরকারী, অরাজনৈতিক, অলাভজনক এবং স্বেচ্ছাসেবী ভোক্তা অধিকার সংগঠন। সেলফ এইড-এর ভোক্তা অধিকার সচেতনতা ও গবেষণা প্রকল্পভুক্ত স্বতন্ত্র সংগঠন হিসাবে ১৬ অক্টোবর ২০০৭ইং সিআরবি প্রতিষ্ঠিত হয় ।প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে স্বেচ্ছাসেবী/কনজিউমার এক্টিভিস্টদের মাধ্যমে ভোক্তা অধিকারে জন-সচেতনতা ও গবেষণা মূলক কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। নিরাপদ খাদ্যের নিশ্চয়তা বিধান ও ভোক্তা অধিকার আইন ২০০৯ সংস্কার এবং ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠার দাবীতে গণ-স্বাক্ষর সংগ্রহের কাজ করছে। কাউন্সিল অব কনজিউমার রাইটস বাংলাদেশ-সিআরবি সমাজের সর্বস্তরে ভোক্তা অধিকার আইন বিষয়ে সচেতনতা তৈরি ও তা বাস্তবায়নে কৃত্রিম মূল্যবৃদ্ধি, ভোক্তাদের পণ্যে ভেজালের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য একটি সামাজিক গোষ্ঠী হিসাবে কাজের সূচনা করে। সর্বস্তরে ভোক্তা ও ভাড়াটিয়া অধিকার প্রতিষ্ঠায় নিবেদিত প্রাণ, স্বেচ্ছাসেবী হিসাবে কর্মরত। এটি সামাজিক, অর্থনৈতিক, স্বাস্থ্য এবং ভোক্তাদের অধিকার এবং স্বার্থ সুরক্ষায় সদা সচেষ্ট।
 |
 |
 |
ভারতে পশ্চিমবঙ্গের উপভোক্তা অধিদপ্তরের সাথে CRB’র মহাসচিব |
CRB’র সচেতনতা মূলক পথসভায় সংগঠনের মহাসচিব |
CRB আমন্ত্রণে দেশে আসেন FCAW সভাপতি শ্রীমতি মালা ব্যানার্জী |
সংগঠনের প্রকৃতি : এটি একটি অলাভজনক, অরাজনৈতিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন (ভলান্টারি মুভমেন্ট)।
সিআরবি’র প্রতিপাদ্য : ‘ভোক্তা ও ভাড়াটিয়ার, চাই আইনী অধিকার’। উপ–প্রতিপাদ্য : নিরাপদ খাদ্য নাগরিক অধিকার, বাস্তবায়নে দায় সবার।
সিআরবি’র কর্ম এলাকা :রেজিস্ট্রেশন বিধি অনুযায়ী সংগঠনের কর্ম এলাকা সমগ্র বাংলাদেশ । তবে বর্তমানে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে দেশের ৪৩টি জেলায় সিআরবি’র সংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে (কোথাও সীমিত ও কোথাও সম্প্রসারিত পরিসরে)
সিআরবি’র সাংগঠনিক ভিত্তি : এই সংগঠনটি সেলফ এইড ফাউন্ডেশনের ভোক্তা অধিকার সচেতনতা ও গবেষণা প্রকল্প হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হলেও এটি একটি স্বতন্ত্র সাংগঠনিক কাঠামো গঠনতন্ত্র এবং কমিটি কর্তৃক পরিচালিত। দেশের মানুষের ভোক্তা অধিকার সুরক্ষায় ও বিশ্বের যে কোন অঞ্চলের মানুষের অধিকার বাস্তবায়নের প্রয়োজনে যে কোন জাতীয় ও আর্ন্তাতিক সংস্থার কাছ থেকে আনুমোদন /নিবন্ধন বা সদস্যপদ গ্রহণ করতে পারবে। এই প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন দেশের দূতাবাস অন্তর্ভূক্ত থাকবে। এই প্রক্রিয়াটি চলমান প্রক্রিয়া হিসাবে বিবেচিত হবে।
 |
 |
 |
CRB’র উদ্যোগে অভিবাসীদের বিষয়ে মন্ত্রীকে ৫দফা প্রস্তাবনা |
বাজার তদারকীতে সাংসদ ফজলে করিমকে CRB’র প্রস্তাবনা |
বাওয়া স্কুলের গাড়ির বিষয়ে CMP পুলিশ কমিশনারকে CRB’র চিঠি |
সিআরবি’ব লক্ষ্য :
তথ্য প্রদান, প্রচার ও সংযোগ শক্তিশালী করা। ভোক্তাদের অধিকার ও দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি এবং অধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে ভোক্তাদের সোচ্চার হতে উদ্বুদ্ধ করা। অধিকার সুরক্ষায় প্রযুক্তিগত ও আইনী সহায়তা প্রদান করা।
সিআরবি’ব উদ্দেশ্য :
ভোক্তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সার্ভিস ও সেবা প্রদানের অনলাইন ভিত্তিক রিভিউ আরকাইভ চালু করা এবং দেশে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠার দাবী বাস্তবায়নে জনমত গঠন করা। নিরাপদ খাদ্যের নিশ্চয়তা বিধানে দেশে এবং বিশ্বের যে কোন জায়গায় যৌথ ভাবে ভোক্তা অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করা।
কেন আমাদের এই স্বেচ্ছাসেবী উদ্যোগ :
ভোক্তাদের অধিকার সুরক্ষায় সরকার শত কোটি টাকা ব্যয় করে “জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর” প্রতিষ্ঠা করেছে এবং দেশের প্রতিটি জেলায় অধিদপ্তরের অফিস প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এছাড়াও বিভাগীয় শহরে অধিদপ্তরের আলাদা বিভাগীয় অফিস রয়েছে। প্রতিটি অফিসের নিজস্ব ওয়েবসাইট রয়েছে। কিন্তু সেখানে ভোক্তাদের অভিযোগ প্রদানের কোন কার্যকর ব্যবস্থা নেই। বেশীরভাগ সাইটে ই-মেইল ও ফোন নাম্বার দেওয়া নেই। যে সব ফোন নাম্বার দেওয়া রয়েছে তাও কার্যকর নয়। দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে অধিদপ্তরের অভিযোগ এ্যাপসটিও অকার্যকর রয়েছে। এছাড়াও পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণে বিএসটিআই, খাদ্যে ভেজাল প্রতিরোধে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ রয়েছে। কিন্তু মাঠ পর্যায়ে সক্রিয় নয়। সেই সুযোগে ভেজালকারী ব্যবসায়ীরা ভোক্তাদের লুণ্ঠণ করছে। রাষ্ট্রীয় সংস্থা সমূহের ব্যর্থতায় অকারণে ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়িয়ে ভোক্তাদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে হাজার হাজার কোটি টাকা। ভোক্তা অধিকারের এই বিশাল সেক্টরে বেসরকারী সংগঠন সমূহের কোন অংশীদারিত্ব বা অংশগ্রহণের সুযোগ রাখা হয়নি শুধুমাত্র জবাবদিহিতার অভাবে। অথচ আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতের পশ্চিমবঙ্গে “ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর” রয়েছে এবং সেখানে মন্ত্রীও আছেন। ভোক্তা অধিকার লঙ্ঘণের মামলা সমূহ বেসরকারী সংগঠনের মাধ্যমে আদালতে উপস্থাপনে সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা এবং অনুদানের ব্যবস্থা রয়েছে। অথচ আমাদের দেশের চিত্র তার বিপরীত। দেশের ১৬ কোটি মানুষ ভোক্তা এবং আমরা নিজেরাও ভোক্তা তাই আমাদের ভোক্তা অধিকার সুরক্ষার জন্য নিজ নিজ অবস্থান থেকে আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। তাই দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থ বিবেচনায় ক্রেতা ও ভোক্তা অধিকার সুরক্ষায় আমাদের এই স্বেচ্ছাসেবী উদ্যোগ।
 |
 |
 |
কদমতলী’র রাস্তা সংস্কারে সিডিএ চেয়ারম্যানকে CRB’র চিঠি |
চসিক বাড়িভাড়া’র তথ্য ওয়েবে প্রকাশের জন্য মেয়র’কে CRB’র চিঠি |
CRB’র প্রকাশনা ডিসি’কে দিচ্ছেন ক্যাব সহ সভাপতি নাজের হোসেন |
লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যসমূহ বাস্তবায়নের কর্মসূচী সমূহ হচ্ছে :
অনুচ্ছেদ-১: সমাজের সর্বস্তরে ভোক্তা অধিকার সচেতনতার জন্য জাতিসংঘ ঘোষিত কনজিউমার রাইটস ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করা। কনজিউমার রাইটস বিষয়ক সচেতনতা ও গবেষণা মূলক প্রকল্প চালু করা। সেবা ও সার্ভিস প্রদানে জবাবদিহিতা সৃষ্টির জন্য কনজিউমার রিভিউ আরকাইভ ও স্বতন্ত্র নিউজ মিডিয়া চালু করা। ক্রেতা-বিক্রেতাদের সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে শিক্ষা/ প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা চালু করা।সমাজের সর্বত্র তথ্য প্রাপ্তিও তথ্য প্রদানের অধিকার নিশ্চিত করা।
অনুচ্ছেদ-২: সভা, সেমিনার ও পথ নাটকের মাধ্যমে ক্রেতা সমস্যা তুলে ধরা। উন্নততর সামাজিক ও অর্থনৈতিক পরিবেশ প্রতিষ্ঠায় পরিচালিত স্থানীয় সংগঠন সমূহের সাথে নেওয়ার্র্ক গঠন প্রশিক্ষণ ও সহযোগিতা প্রদান করা ।প্রযুক্তির মাধ্যমে ভোক্তাদের সুরক্ষা ও ক্ষুতিগ্রস্থ ভোক্তাদের আইনী সহায়তা প্রদান করা।সমকালীন ইস্যু সমূহকে অন্তর্ভূক্ত করে সাংগঠনিক মুভমেন্ট ও সেবা নিশ্চিত করা।
অনুচ্ছেদ-৩: সামাজিক দায়বদ্ধতা ও আইনি সচেতনতায় বিক্রেতাদের “ব্যবসা পরিচালনা প্রশিক্ষণ প্রদান। ক্রেতা সচেতনতা শিক্ষা প্রদানের জন্য শিক্ষা উপকরণ তৈরি ও সরবরাহ। বাজারে প্রচলিত পণ্যের মান পরীক্ষা এবং নিয়মিত বাজার মনিটরিং করা ।কৃষি ও এ্যাগ্রো পণ্য বাজারজাত করণের পূর্বে সরকারী সংস্থার মাধ্যমে পরীক্ষার করার ব্যবস্থা চালুর উদ্যোগ নেওয়া।সমগ্র দেশের বাজার মূল্য বিভাগ আকারে অনলাইনে প্রকাশের ব্যবস্থা করা।
অনুচ্ছেদ-৪: খাদ্যনিরাপত্তা কর্মসূচী বাস্তায়নের লক্ষ্যে নিম্ন আয়ের লোকজনকে সামাজিক ব্যবসার ধারণা গড়ে তুলতে উৎসাহ প্রদান, সমবায় দোকান এবং ক্রেতাদের সামাজিক ব্যবসা পরিচালনার প্রশিক্ষণ ও কারিগরী সহযোগিতা প্রদান করা।
অনুচ্ছেদ-৫ : শ্রমিক ও মানবাধিকার সুরক্ষায় প্রকল্প চালু করা। জলবায়ু পরিবর্তন, শব্দ দূষণ, বায়ু দূষণ, মহামারি, পরিবেশ রক্ষা প্রকল্প চালু করা। পণ্যের বাজার মূল্য সম্প্রচার এবং ট্রাফিক জ্যাম নিরসনে কমিউনিটি রেডিও চালুর উদ্যোগ গ্রহণ করা।
অনুচ্ছেদ-৬ : বেকারত্ব যুবক ও যুব মহিলাদের হস্তশিল্প, ড্রাইভিং ও কারিগরী প্রশিক্ষণ দিয়ে বিকল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা। আত্ম-কর্মসংস্থানে প্রশিক্ষণ এবং উৎপাদন প্রকল্প চালু করা। নরীদের সহায়তার মাধ্যমে শিশু অধিকার সুরক্ষিত করা। প্রশিক্ষণ মডিউল, গাইড বই প্রকাশনা করা।
অনুচ্ছেদ-৭ : সমাজিক নেটওয়ার্ক বৃদ্ধি ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প সম্প্রসারণে বেকার যুবক ও যুব মহিলা উদ্যোক্তা তৈরি করা। উদ্যোক্তাদের জন্য শিল্প সম্প্রসারণ ও মেশিন গবেষণা প্রকল্প চালু করা। উপকরণ, মেশিনারীজ, কারিগরি ও প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করা।
অনুচ্ছেদ-৮ : বেকারত্ব রোধে কৃষি প্রকল্প চালু করা। বাড়ির ছাদে সবজি ও ফল চাষে উৎসাহিত করা। বৃক্ষ হাসপাতল চালু ও সামাজিক বনায়নে অংশিদারিত্বে বৃক্ষ রোপন করা। সরকারী ও ব্যক্তি মালিকানা ভূমি লিজ/ক্রয় করে সদস্য/ স্বল্প আয়ের লোকদের আবাসনের ব্যবস্থা করা।
অনুচ্ছেদ-৯ : সংগঠনের কার্যক্রম সম্প্রসারণের লক্ষ্যে সাংগঠনিক উদ্যোগে দেশ ভ্রমণের পর্যটন মূলক প্রকল্প চালু করা। সাধারণ মানুষের পড়ার অভ্যাস বাড়ানোর জন্য গ্রন্থাগার বা পাঠকক্ষ স্থাপন করা। পযটকদের মাধ্যমে পরিবেশ উন্নয়ন মূলক ও ভোক্তা অধিকার উন্নয়ন ও অংশগ্রহণ বৃদ্ধি উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা।
অনুচ্ছেদ-১০ : সিআরবির’র লক্ষ্য অর্জনে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সমমনা সংগঠনের সঙ্গে নেটওয়ার্ক গঠন করা বা প্রয়োজনীয় সহযোগিতা ও সমর্থন প্রদান করা। ক্রেতাদের জন্য তথ্য সেল গঠন করা। ভোক্তা অধিকার পরিস্থিতি অনুসন্ধান ও গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করা।
অনুচ্ছেদ-১১ : ভোক্তা-অধিকার সম্পর্কিত বিষয় যেমন খাদ্য, শিক্ষা, চিকিৎসা, বাসস্থান, পরিবহন, যোগাযোগ, জ্বালানি, সুপেয় পানি ও কৃষি, পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন, পয়ঃনিষ্কাশন, বিজ্ঞান ও তথ্য প্রযুক্তি, কিশোর-কিশোরী, দক্ষতা উন্নয়নসহ অন্যান্য বিষয়ের ওপর কর্মসূচি গ্রহণ করা।
অনুচ্ছেদ-১২ : কোম্পানী ভিত্তিক ভোগ্য পণ্যের ওজন কারচুপি ও মূল্য বৃদ্ধি মনিটরিং করা। নিয়মিত বি.এস.টি.আই কর্তৃক দোকান পরিদর্শনের ব্যবস্থা কার্যকর করার ক্ষেত্রে স্থানীয় বি.এস.টি আই’ অফিস-এর সাথে যোগাযোগ রক্ষা করা এবং প্রয়োজনে বি.এস.টি.আই কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ পত্র প্রেরণ করা।
অনুচ্ছেদ-১৩ : বি.এস.টি.আই কর্তৃক ঠিকানা বিহীন কোম্পানী বা উৎপাদন ও মেয়াদ উত্তীর্ন তারিখ ছাড়া পণ্য বিপনণ না করার ক্ষেত্রে কঠোরভাবে আইন প্রয়োগে উৎসাহিত করা। সকল শ্রেণির ভোক্তাদেরকে ঠিকানা ও মেয়াদ বিহীন পণ্য ক্রয়ে অনুৎসাহিত করা।
অনুচ্ছেদ-১৪ :ছোট-বড় বাজারের পাশাপাশি এলাকা ভিত্তিক দোকান/ লেইন বাই লেনের দোকান সমূহে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনার ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসনকে উৎসাহিত করা। সংগঠনের কম উদ্যোগী স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে স্থানীও ভাবে পণ্য মূল্য মনিটিরিং এর জন্য ভিজিলেস টিম গঠন করা হবে।
অনুচ্ছেদ-১৫ : দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি প্রতিরোধে ছোট-বড় সকল বাজারে পণ্যের মূল্য তালিকা প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা। পাইকারী বাজার থেকে পণ্য ক্রয়ের ক্ষেত্রে খুচরা ব্যবসায়ীদের রশিদ সংগ্রহের ব্যবস্থা বাধ্যতামূলক করার ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসনকে উৎসাহিত করা।
অনুচ্ছেদ-১৬ :ভেজাল ও স্বাস্থ্য ঝুঁকি বিবেচনায় যত্রতত্র ভোগ্যপণ্য বিপনণের ক্ষেত্রে ভোক্তা অধিকার সুরক্ষামূলক নীতিমালা প্রনয়নে সরকারকে উদ্বুদ্ধ করা। ভোক্তা অধিকার বিষয়ক সংবাদ জনগনের কাছে পৌঁছে দিতে সাংগঠনিক প্রকাশনার ব্যবস্থা করা।
অনুচ্ছেদ-১৭ : ভোক্তা অধিকার বাস্তবায়নে স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে সচেতনতা মূলক সভা, সেমিনার ও কর্মশালার আয়োজন করা। প্রয়োজনে পাড়া মহল্লা বা এলাকায় পথসভা, র্যালী ও প্রতিরোধ মানব বন্ধন আয়োজন করা। স্থানীয় বাজার, পার্ক ও বাসস্ট্যান্ড সমূহে পোস্টার, ব্যানার ও ফেসটুনের মাধ্যমে ভোক্তা অধিকার বিষয়ে জন-সাধারণকে সচেতন করা।
অনুচ্ছেদ-১৮ :সমাজের সর্বস্তরের ভোক্তাদের মধ্যে সামাজিক ঐক্য প্রতিষ্ঠা করা এবং পণ্য বয়কটের মাধ্যমে সিন্ডিকেট করে মূল্য বৃদ্ধির অশুভ তৎপরতা বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা। ভোক্তাদের অধিকার সূরক্ষায় পণ্য মূল্যের উর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে সরকারী সংস্থার সাথে সমন্বয় করে স্থানীয় পার্যায়ে (উৎপাদন ও বিপনণ প্রক্রিয়ার আলোকে) মূল্য নির্ধারণ বা মনিটরিং সেল গঠন করা।
অনুচ্ছেদ-১৯ : জেলা, উপজেলা, সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভার বাজার সহ সকল দোকান পাটে পণ্যের মূল্য তালিকা প্রদর্শনের ব্যবস্থা কার্যকরের ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসনকে উৎসাহিত করা। প্রয়োজনে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে তা কার্যকরের ব্যবস্থা করা।
অনুচ্ছেদ-২০: বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশী মিশন থেকে প্রবাসী বাংলাদেশীদের প্রাপ্ত অধিকার বিষয়ে মনিটরিং করা এবং যে সকল এজেন্সি বিদেশে লোক প্রেরণ করছে তাদের কর্মকান্ড মনিটরিং করা ও তথ্য প্রকাশের মাধ্যমে সেবা গ্রহণকারী অভিবাসী ভোক্তা অধিকার নিশ্চিত করা।
অনুচ্ছেদ-২১ : ভাড়াটিয়া অধিকার বাস্তবায়নে ‘বাড়িভাড়া আইন ১৯৯১ সম্পর্কে সর্বস্তরের মানুষকে তাদের প্রাপ্ত অধিকার বিষয়ে সচেতন করা। বাড়ি ভাড়ার ক্ষেত্রে সর্বত্র ভাড়া চুক্তি সম্পাদন ও তা বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা।
অনুচ্ছেদ-২২ : ভাড়াটিয়াকে বাড়ি ভাড়ার রশিদ প্রদানে উৎসাহিত করা। বাসাভাড়ার চুক্তি নূন্যতম ২বছর মেয়াদ কার্যকর করার বিষয়ে উৎসাহিত করা। স্থানীয় প্রশাসন, কর বিভাগ, পৌরসভা বা সিটি কর্পোরেশনের অনুমোদন সাপেক্ষে আইন অনুযায়ী বাসা ভাড়া বৃদ্ধি প্রক্রিয়া নিশ্চিত করা।
অনুচ্ছেদ-২৩ : নিয়ম অনুযায়ী বছরে নূন্যতম ১ বার বাড়ি সংস্কারের প্রস্তাব কার্যকর করার বিষয়ে উৎসাহিত করা। সরকারী নিয়মে বাসার আকার অনুযায়ী ভাড়া নির্ধারণ কার্যকর করা এবং তা তদারকির ব্যবস্থা চালু করা। পানি, নিরাপত্তা সহ অত্যাবশ্যকীয় সেবা নিশ্চিত করা।
অনুচ্ছেদ-২৪ : আবাসিক বাসার ক্ষেত্রে অগ্রীম বাবদ ৩০হাজার থেকে ২লক্ষ টাকা আদায়ের অঘোষিত নিয়ম বন্ধের কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা। ভাড়াটিয়াদের অধিকার সরকারী কর সুরক্ষায় ট্রেড লাইসেন্সের ন্যায় বাসাভাড়া চুক্তি পরিদর্শনের ব্যবস্থা করা।
অনুচ্ছেদ-২৫ : সর্ব ক্ষেত্রে বাসাভাড়া চুক্তির স্বচ্ছ্বতা নিশ্চিত করতে এবং বাড়িওয়ালা ও ভাড়াটিয়াদের সমস্যা নিরসনে নিয়মিত গণ-শুনানীর আয়োজন করা। বাসাভাড়ার সাথে সম্পৃক্ত সকল সরকারী সংস্থার সাথে ভাড়াটিয়াদের পরিচিত করা এবং সমন্বয় সভার অয়োজন করা।
সিআরবি’র মডেল বাজার ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন-২০০৯ সচেতনতা কার্যক্রম :
  |
 |
 |
ব্যবসায়ীদের CRB’র আইনী কাঠামো বিষয়ে সচেতনতা কার্যক্রম |
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন -২০০৯ বিষয়ে সচেতনতা |
ব্যবসায়ীদের CRB’র আইনী কাঠামো বিষয়ে সচেতনতা কার্যক্রম |
আমাদের দাবী :
নিরাপদ খাদ্যের নিশ্চয়তা বিধানে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ সংশোধন ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণের জন্য “ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা”। আমরা আশা করি জনগণের প্রত্যাশা ও দাবীর ভিত্তিতে ২০০৯ সালে আমরা যেমন ভোক্তা অধিকার আইন লাভে সফল হয়েছি তেমনি আমরা জনমত গঠনের মাধ্যমে মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠার দাবী আদায়ে সফল হব। কারণ বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বা ব্যবসায়িক মানসিকতার কোন দপ্তরের মাধ্যমে কোন দিন ভোক্তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। আমরা দেশে পঁচা গম সহ বহু ভেজাল খাদ্য পণ্য আমদানির সংবাদ পত্রিকায় পেয়েছি কিন্তু তা ধ্বংসের কোন সংবাদ পাইনি। কৌশলে সেসব অ-খাদ্য আমাদের হজম করানো হয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পদতলে বসে “জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর” কোনো দিন ভোক্তাদের কল্যাণ ও অধিকার নিশ্চিত করতে পারবে না। পর্যাপ্ত মজুদ থাকা সত্ত্বেও, চালের মূল্য বৃদ্ধি করে হাজার কোটি টাকা ভোক্তাদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। সরকারী উদ্যোগ থাকা সত্ত্বেও পেঁয়াজ মূল্য স্থিতিশীল রাখার ব্যাপারে অধিদপ্তর কার্যকর ভূমিকা রাখতে ব্যর্থ হয়েছে। দেশে কি পরিমান পেঁয়াজ মজুদ আছে এবং কি পরিমান চাহিদা আছে সে তথ্যও তারা প্রকাশ করতে পারেনি। তাই আমরা দাবী করছি যত দিন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব না হয় ততদিনের জন্য যেন “জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর”কে সমাজ কল্যাণ মন্ত্রালয়ের অন্তর্ভুক্ত করা হোক। ঠিক যেমন প্রতিষ্ঠার আগে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে পরিচালনা করা হয়েছিল।“ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠার” দাবী বাস্তবায়নে দেশব্যাপী আমাদের গণ-স্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযান চলছে। স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে আমরা আমাদের গণ-স্বাক্ষর সম্বলিত দাবী জাতীয় সংসদে প্রেরণ করে মন্ত্রলালয় প্রতিষ্ঠার দাবী বাস্তবায়ন করবো। এই উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে ভোক্তা অধিকার আন্দোলনে যুক্ত সকল স্বেচ্ছাসেবক/কনজিউমার এক্টিভিস্টরা দেশবাসীর কাছে সম্মানিত হবেন এবং সর্বস্তরে মানুষের ভোক্তা অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে।
আমাদের প্রত্যাশা :
সরকারের অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের মত জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরও স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের মাধ্যমে ভোক্তা অধিকার সচেতনতা বৃদ্ধিতে স্থানীয় পর্যায়ে কাজ করবে। সেই লক্ষ্যে আমরা ১১ ফের্রুয়ারী ২০১৫ সালে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিপ্তরের ডিজি মহোদয়ের দপ্তরে আবেদনও জানিয়ে ছিলাম। হতাশা জনক হলেও সত্য বিগত ৮ বছরেও আমরা তার কার্যকর কোন উদ্যোগ দেখতে পাইনি। জন-প্রতিনিধিদের নিয়ে যে কমিটি গঠনের উদ্যোগ রয়েছে তা কাগজ পত্রে সীমাবদ্ধ। তাহলে সরকারের অর্থ অপচয় করে অধিদপ্তর আসলে কাদের স্বার্থ সুরক্ষা করছে ?
কুক্ষিগত ভোক্তা অধিকার সুবিধা লুটেরার :
অন্যান্য অধিদপ্তর বনাম ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর ! কেন এই বৈসম্য ?
যে সকল সংগঠন সমাজ সেবা নিয়ে কাজ করছে তাদের সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয় অনুমোদন বা রেজিস্ট্রেশন দিচ্ছে এবং বছর বছর সমাজহিতকর কাজের জন্য অনুদান দিচ্ছে, যে সকল সংগঠন যুব উন্নয়ন নিয়ে কাজ করছে তাদের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় রেজিস্ট্রেশন দিচ্ছে, যে সকল সংগঠন নারী উন্নয়নে কাজ করছে তাদের নারী ও শিশু কল্যাণ অধিদপ্তর রেজিস্ট্রেশন দিচ্ছে, যে সকল সংগঠন মাদক নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কাজ করছেন তাদের মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর রেজিস্ট্রেশন দিচ্ছে, যে সকল সংগঠন শিল্প সম্প্রসারণে উদ্যোক্তা ও শিল্প স্থাপনে কাজ করছে তাদের শিল্প মন্ত্রণালয়ভুক্ত দপ্তর বিসিক রেজিস্ট্রেশন দিচ্ছে। প্রত্যেক অধিদপ্তর তাদের রেজিস্ট্রেশনভুক্ত গুরুত্বপূর্ণ ও দক্ষ সংগঠন সমূহকে অনুদান বা প্রনোদনা দিয়ে অধিদপ্তরের উন্নয়ন সহযোগী হিসাবে উৎসাহিত করছে। কিন্তু একই সরকারের উন্নয়ন অংশিদার হিসাবে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর নিজেদের কাজকে কুক্ষিগত করে রেখেছে। তাদের এই দূরভিসন্ধিমূলক কর্মপদ্ধতির কারণে ভেজাল পণ্যে এখন বাজার সয়লাব। দেশের ১৭ কোটি মানুষের দৈনন্দিন জীবন যাপন ও ভোক্তা অধিকার চরম হুমকির সম্মুখীন। ভেজাল খাদ্য ও ওষুধের কারণে লক্ষ লক্ষ মানুষ ক্যান্সারসহ জটিল এবং কঠিন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। মানুষের অকাল মৃত্যু ঘটছে। ভোক্তাদের এই সব ক্ষয়-ক্ষতির দায় কি অধিদপ্তর নেবে ? অধিদপ্তরের জন-সম্পৃক্ততাহীন অস্বচ্ছতার কারণে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে যে সকল শিশু খাদ্য, ভেজাল ও নিন্মমানের খাদ্য পণ্য দেশে প্রবেশ করছে তার তথ্য সাধারণ মানুষের দৃষ্টির আড়ালেই থেকে যাচ্ছে এবং পাড়ায় পাড়ায় ভেজাল ঔষধ ও খাদ্য পণ্য তৈরি হচ্ছে। এসব ভেজাল পণ্যের পৃষ্টপোষক অধিদপ্তর ও বিএসটিআই-এর কিছু অসাধু কর্মকর্তা। ভেজালের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষকে সম্পৃক্ত করে গণ-প্রতিরোধ গড়ে তুলতে না পারলে, শুধু মাত্র অধিদপ্তরের বেতনভুক্ত কর্মী ও কর্মকর্তাদের দিয়ে বর্তমান ভেজালের মহামারী থেকে দেশকে উদ্ধার করা সম্ভব নয়।
জাতীয় স্বার্থে ভোক্তা অধিকার আইন সংস্কার জরুরী :
দেশের বেশীর ভাগ মানুষই মনে করে একই প্রতিষ্ঠানকে ভেজাল অপরাধের জন্য শাস্তির আওতায় না এনে বার বার জরিমানা করে অব্যাহতি প্রদান করাটাকে অধিদপ্তর কর্তৃক ভেজাল কারীদের প্রশ্রয় দেওয়ার সামিল। কারণ, জরিমানার অর্থ ভেজাল কারীরা আরো ভেজাল বাড়িয়ে ভোক্তাদের কাছ থেকেই আদায় করেন। দোকানদারের ভেজালের কারণে ভোক্তা ঠকলো আর জরিমানা করে অর্থ পেল অধিদপ্তর, তাতে ভোক্তার কি উপকার হল ? জরিমানার অর্থ ভোক্তার পাওয়ার ক্ষেত্রেও সুভংকরের ফাঁকি রয়েছে। ভেজালের কারণে দোকান বন্ধ করা বা দোকানীকে জেল প্রদানের নজির নেই বললেই চলে। জন-জীবন হুমকিতে ফেলে কোটি টাকার ভেজাল পণ্য বিক্রয় করে লক্ষ টাকা জরিমানা দিয়ে মুক্তি পাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। তাই আইন ও অধিদপ্তরের সংস্কার জরুরী। দেশে ভেজাল প্রতিরোধে এই অস্বচ্ছ ব্যবস্থাপনা কায়েমের মাধ্যমে অধিদপ্তরের লোকজন কোন আর্থিক সুবিধা ভোগ করছেন কি না তা খতিয়ে দেখা এখন সময়ের দাবী। জাতীয় পর্যায়ে ভোক্তা অধিকার সুরক্ষার স্বার্থে সরকারের অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের মত ‘জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর’কে গণমুখী করে দেশের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, যুব সংগঠন, সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া সংগঠন সমূহকে স্থানীয় ভাবে সম্পৃক্ত করে ভোক্তা অধিকার নিশ্চিত করার দাবী জানাচ্ছি।
সিআরবির সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রম :
 |
 |
 |
CRB’র চিত্রাংকন প্রতিযোগিতায় পুরস্কার দিচ্ছেন খাগড়াছড়ি’র DC |
সিলেটে বন্যায় ত্রাণ বিতরণ করছেন CRB’র সিলেট বিভাগীয় কমিটি |
CRB’র পক্ষে সমর্থন নিতে নোবেল বিজয়ীর কাছে প্রতিনিধিরা |
কেন ভোক্তা অধিকার বিষয়ে সবার কথা বলা উচিৎ ? :
আইনটি ২০০৯ সালে প্রনীত হলেও দুঃখজনক হলেও সত্য দেশের বেশীর ভাগ মানুষ এই আইন সম্পর্কে অবগত নয়। ভোক্তা অধিকার বিষয়ে বর্তমান সরকারের যুগান্তকারী উদ্যোগে দেশের ৬৪টি জেলাতেই ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু কর্মকর্তাদের অপেশাদারিত্ব ও আমলাতান্ত্রিক মনোভাবের কারণে ভোক্তারা তাদের আইনগত অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অধিদপ্তর নিজেদের কার্যক্রম শুধুমাত্র জরিমানা আদায়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রেখেছেন। জরিমানা আদায়ের ক্ষেত্রে অধিদপ্তর যতটা উৎসাহী ব্যবসায়ীদের সচেতন করা বা প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যাপারে ততটা আগ্রহী নন। দেশে পিএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য কোচিং সেন্টার থাকলেও ব্যবসা পরিচালনার কোন কোচিং সেন্টার বা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নেই ! ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে কী করা উচিৎ বা কী করা যাবে না সেই শিক্ষা ব্যবসায়ীরা পাবে কোথায় ? জানার অধিকার ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনের অন্যতম অনুষঙ্গ! কাউকে সচেতন না করে শাস্তি দেওয়াও অপরাধ। কোন দিক নির্দেশনা বা প্রশিক্ষণ না দিয়ে কি শুধুমাত্র জরিমানা আদায় করে ভোক্তা অধিকার প্রতিষ্ঠা সম্ভব ? হাজার হাজার কোটি টাকার জরিমানা আদায় হলেও সে টাকা কোথায় ব্যয় হচ্ছে তা ভোক্তারা জানেন না ! জরিমানার আদায়কৃত অর্থ ভোক্তা এবং ব্যবসায়ীদের। তাই আমাদের দাবী সেই অর্থ দিয়ে শুধু মাত্র ব্যবসায়ী ও ভোক্তাদের প্রশিক্ষন সচেতনতায় ব্যয় করা হোক। প্রশিক্ষনের মাধ্যমে ব্যবসায়ীদের সার্টিফাইড করা হোক এবং সার্টিফিকেটধারী ব্যবসায়ীদের ভেজালের শাস্তি কঠোর করা হোক। সে লক্ষ্য বাস্তবায়নে আমরা কাজ করছি। হাস্যকর হলেও সত্য, অধিদপ্তরের ৬৪ জেলায় ওয়েব সাইট থাকলেও তার বেশীর ভাগ অকার্যকর এবং অভিযোগ করার সুযোগ নেই। তাই আমরা সমাজের সর্বস্তরে ভোক্তা অধিকার সচেতনতা ও সহায়তার কাজ করছি। অধিদপ্তরে অভিযোগ প্রদানের জন্য আমরা একটি ডিজিটাল অভিযোগ এ্যাপস চালু করেছি যা মোবাইল থেকেই অভিযোগ করা যায়। দুর্বল মনিটরিং ব্যবস্থার কারণে মূল্য বৃদ্ধির পাশাপাশি দিন দিন খাদ্য ও ঔষধের ভোজাল চরম আকার ধারণ করেছে। তাই নিজের জীবন রক্ষার জন্য হলেও এ বিষয়ে সবার কথা বলা উচিৎ।
 |
 |
 |
শ্রীপুর উপজেলায় এসি ল্যান্ডের নেতৃত্বে CRB’র বাজার মনিটরিং |
রাজশাহী বিভাগে নওগাঁ জেলায় CRB’র বাজার মনিটরিং কার্যক্রম |
রংপুর বিভাগের নীলফামারী জেলায় CRB’র বাজার মনিটরিং কার্যক্রম |
বর্তমানে যে সকল কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে : ( স্থানীয় পর্যায়ে সংগঠনের প্রাথমিক কাজ 🙂
১) ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ সম্পর্কে জনসচেতনতা সৃষ্টি করা। ভোক্তা অধিকার লঙ্ঘণের ক্ষেত্রে ন্যায় বিচার প্রাপ্তিতে আইনী সহায়তা প্রদান করা।
২) ক্রেতা সুরক্ষা ও স্থানীয় বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনার জন্য প্রত্যেক এলাকায় (উপজেলা বা জেলা পর্যায়ে) একটি করে বাজারকে মডেল করে ব্যবসার তথ্য সংগ্রহ করা।
৩) স্থানীয় পাইকারী ও খুচরা বাজারের মূল্যের পার্থক্য যাচাই। বাজার মনিটরিং না হলে স্থানীয় প্রশাসনকে সংগঠনের পক্ষ থেকে বাজার মনিটরিং করার জন্য লিখিত আবেদন করা।
৪) স্থানীয় পর্যায়ে সংগঠনের অনুমোদিত কমিটির মাধ্যমে বাজার পরিস্থিতি মনিটরিং করা। বিদ্যমান ভেজাল ও অনিয়ম সমূহ নিরসনে তথ্য উপাত্তসহ জন্য স্থানীয় প্রশাসনকে লিখিত ভাবে অবহিত করা। স্থানীয় পর্যায়ে তা নিরসন সম্ভব না হলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের শরনাপন্ন হওয়া। জণস্বার্থের প্রয়োজনে সংবাদ সম্মেলনের উদ্যোগ গ্রহণ করা।
৫) এলাকার প্রধান উৎপাদনকারী সফল ফসলের স্থানীয় বাজার মূল্যের তথ্য সংগ্রহ করা। কৃষকরা ন্যায্য মুল্য পাচ্ছেন কিনা তা যাচাই করা এবং প্রতিকারের উদ্যোগ নেয়া।
৬) এলাকায় কোন সরকারী বা বেসরকারী (গোডাউন) খাদ্য গুদাম আছে কি ? কোল্ডষ্টোর আছে কি ? সেখানে কি পরিমান পরিমান পণ্য মওজুত আছে তার তথ্য সংগ্রহ করা।
৭) স্থানীয় এলাকার প্রধান জনদুর্ভোগ, স্কুল-কলেজের সংখ্যা এবং সেবা বিষয়ক তথ্য সংগ্রহ। স্থানীয় বাস, রেল ও লঞ্চ টার্মিনালের সেবার মান যাচাই। স্থানীয় জ্বালানী (এলপি গ্যাস) ও বিদ্যুৎ সেবার তথ্য সংগ্রহ। স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তা নিয়ে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ, ইভটিজিং ও সাইবার ক্রাইম প্রতিকার সেল গঠন করা।
সিআরবি কমপ্লেইন এ্যাপস :
ভোক্তা অধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ “জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে” প্রেরণের জন্য সিআরবি এই অভিযোগ এ্যাপসটি তৈরি করেছে। এই এ্যাপসটি ঈজই ঈড়সঢ়ষধরহ অঢ়ঢ় নামে পরিচিত। বিশ্ব-ভোক্তা অধিকার দিবস-২০১৯ এ চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি আনুষ্ঠানিক ভাবে এই এ্যাপসটি উদ্বোধন করেন। এড়ড়মষব চষধু ঝঃড়ৎব থেকে এই এ্যাপসটি ডাউনলোড করা যাবে। এ্যাপস থেকে দিনরাত ২৪ঘন্টা এবং সপ্তাহে ৭দিন দেশের ৬৪টি জেলায় ভোক্তারা অভিযোগ দায়ের করতে পারবেন। এ্যাপস লিঙ্ক : https://m.apkpure.com/crb-complaints-app/com.consumerrightsbd.org
কারা যুক্ত হতে পরবে বা কাদের জন্য এই সংগঠন ? ভোক্তা অধিকার কর্মী বা কনজিউমার এক্টিভিস্ট ?
যে সামাজিক অপরাধে সম্পৃক্ত নয়, আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, নিজের সৎ উপার্জিত অর্থের কিছু অংশ ও সময় ব্যয় করে ভোক্তা অধিকার অর্জনে মানুষকে সচেতন করতে কাজ করেন এবং অধিকার বঞ্চিত মানুষের পাশে দাঁড়ান তিনিই ভোক্তা অধিকার কর্মী বা কনজিউমার এক্টিভিস্ট। (ভোক্তা অধিকার সার্বজনীন অধিকার, তবে নেতৃত্ব প্রদানের সুযোগ সবার জন্য উনমুক্ত নয় )
Who is a consumer rights activist or consumer activist?
He who is not involved in social crime, respects the law, spends part and time of his honest earnings to make people aware of consumer rights and stands by disenfranchised people is a consumer rights activist or consumer activist. (Consumer rights are universal rights, but leadership opportunities are not open to everyone)